anorexia-nervosa-disease-management-and-treatment

অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা বা কম খাওয়ার রোগ Leave a comment

কম খাওয়ার বা অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা  রোগ। সাধারণত মেয়েদের মধ্যেই বেশি দেখা যায় এই রোগ। এতে রোগীর খাওয়ার ইচ্ছা অস্বাভাবিক রকম কমে যায়। অল্পবয়স্ক মেয়েদের স্লিম হওয়ার বাসনা থেকে অনেক সময় এই সমস্যার শুরু। তবে অন্যান্য মানসিক চাপও থাকতে পারে। ধীরে ধীরে খাওয়ার ইচ্ছা কমতে থাকে, ওজন কমতে থাকে। তার সঙ্গে অপুষ্টিজনিত নানা সমস্যা দেখা দেয়।

কারও ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে ২৫ শতাংশ কমে গেলে অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা হয়েছে ধরা যায়।

লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য

  • অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা আক্রান্ত রোগী অত্যন্ত কম খাবার গ্রহণ করে। বিএমআই বা বডি মাস ইনডেক্স ১৮ দশমিক ৫–এর নিচে মানে কম ওজন। এরা সর্বদা আতঙ্কে থাকে যে ওজন বেড়ে যাবে। অনেক সময় ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যায়াম করে।
  • কিশোরীরা রক্তশূন্যতা, অস্টিওপোরোসিস, মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া, বন্ধ্যত্ব, রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতা, এমনকি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়।
  • খাবারের প্রতি এই অনীহার পেছনে ওজন কমানোর বাতিক, মোটা হওয়ার কারণে কটূক্তির শিকার হওয়ার ইতিহাস, মানসিক চাপ, পারিবারিক অশান্তি ইত্যাদি অনেক কিছু কাজ করে।
  • ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রক্তচাপ কমে যায়। হার্টবিটে সমস্যা হয়। রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। মাসিক বন্ধ হয়ে যায়।

জটিলতা

রোগী অপুষ্টির শিকার হয় ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হতে থাকে। এমনকি ভেন্ট্রিকুলার ফিব্রিলেশন হয়ে আকস্মিক মৃত্যু হতে পারে।

চিকিৎসা

এটি মূলত মনের রোগ, তাই এই রোগের চিকিৎসায় মনোবিদের সাহায্য দরকার হবে। ধীরে ধীরে খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। সপ্তাহে অন্তত এক কেজি ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। সে জন্য পুষ্টিবিদের সাহায্যে ক্যালরির মান নির্ণয় করে ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে নল দিয়ে খাওয়াতে হতে পারে এবং ভিটামিন ও খনিজ সাপ্লিমেন্ট দিতে হতে পারে। দিনে ছয় থেকে সাতবারে ভাগ করে খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে। তার সঙ্গে সাইকোথেরাপি চলবে।

 

হাসিনা আকতার,

বিভাগীয় প্রধান, খাদ্য ও পুষ্টি,

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *