antibiotic-resistance-health-problem-and-management

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু Leave a comment

১৫-২০ বছর আগেও টাইফয়েড চিকিৎসায় যে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হতো, সেটি এখন আর কার্যকর হয় না। যক্ষ্মার চিকিৎসায় বেশ কয়েকটি ওষুধ ব্যবহৃত হয়, এর মধ্যে কয়েকটির প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে। এ জন্য দেশে মাল্টি ড্রাগ রেসিস্ট্যান্স টিবির প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। কেন এমন হচ্ছে? কেন একটি অসুখে আমরা যে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতাম, সেটি আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এর মূল কারণ হলো অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্স।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বলতে এমন এক অবস্থাকে বোঝায়, যখন কতিপয় ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিকের আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকার ক্ষমতা অর্জন করে। এসব ব্যাকটেরিয়াকে বলা হয় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া। এরা অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতিতেও স্বাভাবিক গতিতে বেড়ে উঠতে ও বংশবিস্তার করতে পারে। এতে মানুষ বা পশুর শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস পায়। আগে যে অ্যান্টিবায়োটিকে রোগ সেরে যেত, সেই অ্যান্টিবায়োটিকে তা সারে না।

অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স (এবিআর) একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশে প্রতিবছর ২৮ লাখ মানুষ বিভিন্ন রকম রেসিস্ট্যান্স অর্গানিজম বা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুতে আক্রান্ত হচ্ছেন, এর মধ্যে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন।

কেন প্রয়োজন সচেতনতা

অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নিয়ে এখনই সতর্ক হতে হবে। কারণ, এর কারণে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুহার ও ঝুঁকি বেড়ে চলেছে। চিকিৎসা খরচ বেড়ে গেছে।

কারণ

অ্যান্টিবায়োটিকের অবাধ ও অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার, সর্দি-কাশি-জ্বর হলে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে ফেলা; চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন; অ্যান্টিবায়োটিক যথাযথভাবে শেষ না করা; প্রাণিসম্পদ ও মাছ চাষে অ্যান্টিবায়োটিকের অত্যধিক ব্যবহার; হাসপাতাল-চেম্বারে দুর্বল ও অপ্রতুল সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা ইত্যাদি।

কী করণীয়

সর্দি বা ফ্লুর মতো ভাইরাসের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক সেবন না করা; অসুখ হলে নিবন্ধিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া, দোকানি বা অন্য কারও পরামর্শে ওষুধ না খাওয়া; স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার জন্য জোর না করা; অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের সময় নির্দেশাবলি অনুসরণ করা, পূর্ণ মেয়াদ শেষ করা; জনসচেতনতা তৈরিতে সাহায্য করা।

ডা. নওসাবাহ্ নূর,

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ,

পপুলার মেডিকেল কলেজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *