ফুসফুস কিংবা শ্বাসনালিতে সংক্রমণ বা প্রদাহকে নিউমোনিয়া বলা হয়। ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণে যেমন নিউমোনিয়া হতে পারে, তেমনি খাদ্যকণা ও বিভিন্ন তরল খাদ্যনালির পরিবর্তে ফুসফুস কিংবা শ্বাসনালিতে গিয়ে প্রদাহ সৃষ্টি করেও হতে পারে। একে বলে অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া।
যেভাবে হয়
কোমায় থাকা, স্ট্রোক কিংবা মস্তিষ্কে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তি অচেতন কিংবা অর্ধচেতন হয়ে গেলে দুর্বল গ্যাগ রিফ্লেক্সের জন্য অ্যাসপিরেশনের ঘটনা ঘটে। বার্ধক্যে ডিমেনসিয়ার কারণে অনেকের খাবার গিলতে সমস্যা হয়। এসব কারণে অনেক সময় খাবার ফুসফুসে চলে যায়। এ ছাড়া ওষুধ, অসুস্থতা, বা অস্ত্রোপচারের সময় অ্যানেসথেশিয়ার ওষুধ প্রয়োগে গ্যাগ রিফ্লেক্স দুর্বল হতে পারে।
যেভাবে বুঝবেন
বয়স্ক ও অসুস্থ বা শয্যাশায়ী ব্যক্তির হঠাৎ মৃদু থেকে তীব্র কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর এবং দুর্গন্ধযুক্ত ও গাঢ় সবুজ রঙের কফ—এই রোগের প্রধান লক্ষণ। এ ছাড়া কাশির সঙ্গে পুঁজ বা রক্তও যেতে পারে। অনেক সময় রোগীর বুকে ব্যথা থাকে।
প্রতিকারের উপায়
দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রোগের ইতিহাস, লক্ষণ, স্টেথিসকোপে কর্কশ বা অস্বাভাবিক শ্বাসের শব্দ শুনে খুব সহজে রোগ নির্ণয় করা যায়। অনেক সময় কিছু সাধারণ পরীক্ষা যেমন বুকের এক্স-রে, কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট, ধমনির রক্তের গ্যাস বিশ্লেষণ ইত্যাদি রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করতে পারে। সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে বেশির ভাগ রোগীকে বাড়িতে রেখে সারিয়ে তোলা যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তিকে তাড়াহুড়া না করে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে খাওয়াতে হবে। তাদের শোয়া বা আধা শোয়া অবস্থায় খাওয়ানো অনুচিত। খাবার গিলতে সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নাকে নল ব্যবহার করতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
ডা. মধুরিমা সাহা,
রেজিস্ট্রার, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট,
বারডেম হাসপাতাল