baldy-head-skull-skinn-disease

টাক সমস্যার সমাধানে Leave a comment

অতিরিক্ত মানসিক চাপ, কর্মব্যস্ততা, খুশকি, মাথার ত্বকের অপরিচ্ছন্নতা, অতিরিক্ত ডায়েট ও পুষ্টিহীনতার কারণেও টাক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

টাক পড়াকে চিকিৎসাশাস্ত্রের ভাষায় অ্যানড্রোজেনেটিক অ্যালোপিসিয়া বলে। এই সমস্যা দেখা দিলে মাথার উপরিভাগের চুল ও দুই পাশের চুল পাতলা হয়ে যায়। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১২৫টি চুল পড়া স্বাভাবিক। চুল পড়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত হতে হবে তখনই, যখন দিনে ১২৫টির বেশি চুল পড়ে এবং নতুন করে আর গজায় না।

পরিবারে অন্যদের অল্প বয়সে টাক পড়ার সমস্যা থাকলে এভাবে চুল পড়ার আশঙ্কা বেশি। চুল পড়ে যাওয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এর একটি হলো অ্যানাজেন ইফফ্লুভিয়াম। নানা রকম ওষুধ ও কেমোথেরাপির জন্য যখন চুল পড়ে, তাকে অ্যানাজেন ইফফ্লুভিয়াম বলে। আর চুলের ফলিকল যখন রেস্টিং স্টেজে যায়, তখন তাকে টেলোজেন ইফফ্লুভিয়াম বলে। চুলের ফলিকল রেস্টিং স্টেজে যাওয়া মানে চুল আর বড় না হওয়া এবং একসময় বেশি হারে চুল ঝরে যাওয়া।

কারণ

যেকোনো দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক অসুস্থতা (যেমন যক্ষ্মা, টাইফয়েড), কোনো অস্ত্রোপচারের পর, রক্তস্বল্পতা, ওজন কমে যাওয়া, হজমের সমস্যা বা পরিপাকতন্ত্রের সমস্যার কারণে চুল বেশি হারে পড়তে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত মানসিক চাপ, কর্মব্যস্ততা, খুশকি, মাথার ত্বকের অপরিচ্ছন্নতা, অতিরিক্ত ডায়েট ও পুষ্টিহীনতার কারণেও টাক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি মূত্রনালির প্রদাহের কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গর্ভাবস্থা, মেনোপজের পর বা মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর। অতি মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ গ্রহণ, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সেবনেও এই সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়া বংশগত কারণেও টাক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

করণীয়

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই ডায়েটিশিয়ান, নিউট্রিশনিস্ট কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার তালিকা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। চাপমুক্ত থাকুন। বড় কোনো রোগ হলে শরীর সারাতে সমস্ত শক্তি ব্যয় হয় এবং চুল পড়ে। এ ক্ষেত্রে চুল পড়তে থাকে তিন মাস। পরে চুল গজাতে সময় লাগে তিন মাস। তাই দুশ্চিন্তা না করে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। খাবারে অনিয়ম করা যাবে না। অসুস্থতায় হাই প্রোটিন ডায়েট গ্রহণ করুন। রক্তশূন্যতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

চুল ও মাথার ত্বকের সবচেয়ে বড় যত্ন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। চুলের সঠিক যত্নের জন্য প্রথমেই চুলের সঠিক ধরন জেনে নেওয়া জরুরি। চুলের ধরন বুঝে চুলের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবহার করা উচিত। অতিরিক্ত রাসায়নিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যাবে না। ক্রমাগত গরম জিনিস যেমন ব্লোড্রায়ার এগুলো যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করতে হবে। চুলের অন্যতম শত্রু হলো খুশকি। তাই খুশকির প্রতিকার করতে হবে দ্রুত। কী কারণে চুল পড়ছে, সেটা নির্ধারণ করা জরুরি।

 

ডা. জাহেদ পারভেজ,

চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ,

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *