leaking-urine-without knowing-uti-urinary-incontinence-female-&-male

সমস্যাটি বিব্রতকর Leave a comment

সঠিক ওজন বজায় রাখুন। নিয়মিত পেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম অনুশীলন করুন। ক্যাফেইন, অ্যালকোহল এবং অম্লীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।

যখন-তখন প্রস্রাব ঝরে যাওয়া অথবা ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স—বিব্রতকর একটি সমস্যা। কাশি বা হাঁচির সময় কিংবা প্রস্রাবের তাগিদ অনুভব করলে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাঝে মাঝে প্রস্রাব বের হয়ে যায়। অনেক সময় সমস্যা এত তীব্র হয় যে রোগী শৌচাগারে যাওয়ার আগেই ঘটনা ঘটে যায়। এই সমস্যা বয়সজনিত। তবে পুরুষদের তুলনায় নারীরা এ সমস্যায় বেশি ভোগেন।

কারণ কী

নারীদের গর্ভধারণ, সন্তান প্রসব, মেনোপজ, জরায়ু ফেলে দেওয়া ইত্যাদি নানা কারণে পেলভিক ফ্লোরের মাংসপেশি দুর্বল ও নিচের দিকে ঝুলে পড়তে পারে এবং এর থেকে সমস্যাটি দেখা দেয়। পুরুষদের প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হওয়া, প্রোস্টেট ক্যানসার ইত্যাদি কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত ওজন, কিছু স্নায়ুগত রোগ (পারকিনসন, স্ট্রোক, ব্রেইন টিউমার, স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি), অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসসহ প্রস্রাবের সংক্রমণের কারণেও প্রস্রাব ঝরতে পারে।

চারটি ধরন

স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্স:

যখন রোগী কাশি, হাঁচি, হাসি, ব্যায়াম বা ভারী কিছু উত্তোলন করেন, তখন মূত্রাশয়ে চাপ পড়ে এবং প্রস্রাব বেরিয়ে যায়।

আর্জ ইনকন্টিনেন্স:

প্রস্রাব করার আকস্মিক তীব্র আকাঙ্ক্ষা অনুভব হয় এবং তার পরপরই প্রস্রাব বেরিয়ে যায়; প্রায়ই বাথরুমে যাওয়ার আগেই প্রস্রাব হয়ে যায়।

ওভারফ্লো ইনকন্টিনেন্স:

প্রস্রাব করার পর মূত্রাশয় পুরোপুরি খালি হয় না এবং মূত্রাশয়ের ভেতর প্রস্রাব জমে থাকার কারণে প্রস্রাবের ঘন ঘন বা ক্রমাগত চাপ অনুভব হয়। বারবার টয়লেটে যেতে হয়।

মিশ্র ইনকন্টিনেন্স:

একাধিক ধরনের ইনকন্টিনেন্স একসঙ্গে হতে পারে; প্রায়শই স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্স এবং আর্জ ইনকন্টিনেন্স একসঙ্গে হতে দেখা যায়।

চিকিৎসা কী

চিকিৎসা এর ধরন, তীব্রতা এবং অন্তর্নিহিত কারণের ওপর নির্ভর করে। যদি অন্য কোনো রোগ অথবা সমস্যার জন্য এই উপসর্গের সৃষ্টি হয়, তাহলে আগে সেই অবস্থার চিকিৎসা দরকার।

আচরণগত কৌশল খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেমন—

মূত্রাশয় প্রশিক্ষণ:

প্রতিবার প্রস্রাব করার তাড়না অনুভব করলে ১০ মিনিটের জন্য বন্ধ রাখার চেষ্টা করা দিয়ে শুরু করতে হবে। লক্ষ্য হলো প্রতিবার শৌচাগারে যাওয়ার মধ্যে সময় বাড়ানো।

ডাবল ভয়েডিং:

মূত্রাশয় সম্পূর্ণরূপে খালি করতে শিখতে হবে। ডাবল ভয়েডিং মানে প্রস্রাব করা, তারপর কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে আবার চেষ্টা করা।

নিয়মিত মূত্রত্যাগ:

প্রতি দুই থেকে চার ঘণ্টা পর নিয়মিত মূত্র ত্যাগ করতে হবে।

পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ:

নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে পেলভিক ফ্লোরের মাংসপেশি শক্তিশালী করে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে এ সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব।

প্রতিরোধে করণীয়

সঠিক ওজন বজায় রাখা। নিয়মিত পেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম অনুশীলন। ক্যাফেইন, অ্যালকোহল এবং অম্লীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। সুস্থ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। আঁশযুক্ত খাবার বেশি খান; যা কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। দীর্ঘদিনের কাশির সমস্যা থাকলে সঠিক চিকিৎসা করান; কারণ, কাশি স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্সের একটি কারণ। ধূমপান বাদ দিতে হবে।

ডা. নওসাবাহ্ নূর,

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ,

পপুলার মেডিকেল কলেজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *