করোনাভাইরাসের যত ধরন (ভ্যারিয়েন্ট), এদের মধ্যে অমিক্রন যে ভিন্ন চরিত্রের, তা এখন স্পষ্ট।
এর মধ্যে আরেক বিস্ময়। চীনের বিজ্ঞানীরা দাবি করলেন, অমিক্রনের জন্ম ইঁদুরের শরীরে। এর প্রমাণ হিসেবে তাঁরা হাজির করলেন গবেষণাপত্রের মাধ্যমে সাক্ষ্যপ্রমাণ। বর্ণনা চাঞ্চল্যকর। তাঁরা বলেন, মানুষের শরীর থেকে এই ভাইরাস প্রবেশ করেছিল ইঁদুরের শরীরে, আবার মানুষের শরীরে, কিন্তু এর মধ্যে ঘটে গেছে অনেক মিউটেশন।
শুরু থেকেই এর চরিত্রের যে ভিন্নতা, অন্য ধরনের চেয়ে আলাদা, তা বোঝা গেল। এর প্রাণঘাতী ক্ষমতা অন্য ধরনের চেয়ে কম, কিন্তু সংক্রমিত করার ক্ষমতা, বিস্তারের ক্ষমতা কয়েক গুণ বেশি।
আরেকটা খবর:
এরই মধ্যে অমিক্রনের উপধরন চলে এসেছে। এমন এমন মিউটেশন দেখা গেল, যা আগে দেখা যায়নি। অবাক ব্যাপার হলো অমিক্রনে এমন পাঁচটি মিউটেশন দেখা গেছে, যা ইঁদুরের ফুসফুসের নমুনার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
গবেষণা করছেন তাইওয়ানের নান কাই বিশ্ববিদ্যালয় ও দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের বিজ্ঞানীরা। গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে বায়োসেফটি অ্যান্ড বাইওসিকিউরিটি জার্নালে।
অমিক্রন নিয়ে নানা কথা
এখন পর্যন্ত অমিক্রনের ৫০টির বেশি মিউটেশন দেখা গেছে। এর বেশির ভাগ অন্য প্রজাতির সঙ্গ মেলেনি।
এর জন্ম নিয়েও আছে নানা তত্ত্ব। তিনটি তত্ত্ব এসেছে সামনে।
১। ইমিউনোকম্প্রোমাইজড (রোগ প্রতিরোধক্ষমতা নেই বা কম) কোনো মানুষের দেহে, মনে করা হচ্ছে কোনো এইডস রোগীর দেহে জন্ম এ অমিক্রনের।
২। কোভিড রোগীর দেহেই সবার অজান্তে মিউটেশন হয়ে সৃষ্টি হয়েছে অমিক্রনের। অবশ্য এই তত্ত্ব তেমন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
৩। মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটিয়েছে, এমন কোনো করোনার ধরন প্রাণীদেহে ঢুকে ঘটিয়েছে কয়েক দফা মিউটেশন। আর এভাবে সৃষ্টি অমিক্রনের।
এদিকে চীনের আরেক দল বিজ্ঞানী জানান তাঁরা এমন অ্যান্টিবডি তৈরি করেছেন, যা কিনা প্রতিহত করতে পারে অমিক্রনকে। তাঁরা সাংহাইয়ের ফিউ ডান ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী। তাঁরা দাবি করেন, এই কৃত্রিম অ্যান্টিবডির কুকিং প্রিন্সিপল খুঁজে পেয়েছেন, যা কিনা ঠেকিয়ে দিতে পারে এই অমিক্রন। প্রধান বিজ্ঞানী হুয়াং জিংয়ে জানান অন্য একটি গবেষণা করার সময় প্রায় কাকতালীয়ভাবে এমন অমিক্রন রোধকের সন্ধান পান তাঁরা। বায়ো আর্কাইভের ওয়েবসাইটে (biorxiv.org) পাওয়া গেল এমন তথ্য।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী