new-born-baby-common-problem

নবজাতকের ১০ সমস্যা Leave a comment

সুস্থ নবজাতকেরও এক সপ্তাহ বয়সের মধ্যে এমন কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা মা-বাবাকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। এসব উপসর্গ অবশ্য অসুখের পর্যায়ে পড়ে না। এর জন্য চিকিৎসারও প্রয়োজন নেই। তবে বিজ্ঞানসম্মত ধারণা থাকা দরকার। নয়তো কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে অনেকে নানা কাজ করে বসেন। এমন ১০টি সমস্যা হলো:

১. মিলিয়া:

জন্মের প্রথম কয়েক দিনের মধ্যে ত্বকের ঘর্মগ্রন্থির মুখগুলো শিশুর নাকে ও মুখে সাদাটে গুটি হিসেবে দেখা দিতে পারে। এগুলো কিছুদিনের মধ্যে আপনা-আপনি সেরে যায়।

২. ইরিথেমা টক্সিকাম:

চলতি ভাষায় একে বলে মাসিপিসি। জন্মের দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিনে মুখ, বুক ও পিঠে এগুলো দেখা দেয়। দেখতে লালচে আভামণ্ডিত দানা। কখনো কখনো গুটির মুখে সাদাটে পুঁজ থাকতে পারে। এটিও আপনাতেই সেরে যায়।

৩. মঙ্গোলিয়ান ব্লু স্পট:

নীলচে কালো এই দাগ, বিশেষ করে পিঠে ওঠে। এতেও ভয়ের কিছু নেই। এই স্পটের সঙ্গে ডাউন সিনড্রোমের মিল থাকলেও কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত এটিও নিজে নিজে সেরে যায়।

৪. এপস্টেইন পার্ল:

মুক্তার মতো দেখতে এপিথেলিয়েল কোষকলার সমষ্টি মুখের ভেতরে তালুতে বা শিশ্নের অগ্রভাগে থাকতে পারে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

৫. ফোলা স্তন:

ছেলে বা মেয়ে উভয় ধরনের নবজাতকেরই ফোলা স্তন দেখা যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় মায়ের কাছ থেকে পাওয়া হরমোনের প্রভাবে এটি ঘটে থাকে। এগুলোরও কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।

৬. যোনিপথে রক্তক্ষরণ:

সদ্যোজাত মেয়েশিশুর যোনিপথে মাসিক হওয়ার মতো রক্তক্ষরণ হওয়া কিন্তু অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। তবে মা-বাবা এতে অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়েন। গর্ভকালে মায়ের শরীর থেকে শিশুর শরীরে যাওয়া ইস্ট্রোজেন হরমোনের কারণে এমনটা ঘটে থাকে। কয়েক দিনের মধ্যেই এটি বন্ধ হয়ে যায়।

৭. যোনিমুখের নিঃসরণ:

গর্ভকালে মায়ের থেকে পাওয়া হরমোনের প্রভাবে সদ্যোজাত মেয়েশিশুর যোনিপথে সাদা ঘন নিঃসরণ ঘটতে পারে। এটিও আপনা থেকেই সেরে যায়।

৮. নেটাল টুথ:

চলতি ভাষায় একে বলে গর্ভদাঁত। সাধারণভাবে নিচের পাটির মাঝখানে থাকে। একে অশুভ বা অলক্ষুনে ভাবার কোনো কারণ নেই। দুধদাঁত ওঠার আগেই এটি ঝরে যায়। তবে যদি নড়বড়ে থাকে বা বুকের দুধ চুষে খেতে সমস্যা হয়, তাহলে তুলে ফেলা যায় এটি।

৯. ফাইমোসিস:

এ সমস্যায় সদ্যোজাত শিশুর শিশ্নের অগ্রভাগের চামড়া এমনভাবে সেঁটে থাকে, মূত্রনালির অগ্রভাগও খুব সরু থাকে বা দেখা যায় না বললেই চলে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘পিন হোল মিয়াটাস’ বলে। শিশুর প্রস্রাবে কোনো সমস্যা না থাকলে এ নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই।

১০. ফিজিওলজিক্যাল জন্ডিস:

একে নির্দোষ জন্ডিস বলে। সদ্যোজাত শিশুর ৬০-৮০ শতাংশে এ সমস্যা দেখা যায়। জন্ডিস ছাড়া শিশুর আর কোনো অসুবিধা থাকে না। প্রস্রাবের রং সাদা থাকে। ১০-১২ দিন বয়সে এটি চলে যায়।

প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী,

সাবেক বিভাগীয় প্রধান,

শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *