পা পরিষ্কার করতে অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করবেন না, এতে ত্বক আরও শুষ্ক হয়, কুসুম গরম পানি ভালো। পিউমিস স্টোন বা ফুট স্ক্রাবার দিয়ে পায়ের গোড়ালি ঘষে পরিষ্কার করে চাপ দিয়ে মুছে ভালো ফুট ক্রিম বা পেট্রোলিয়াম জেলি পুরু করে লাগিয়ে নিন।
শীতকালে অনেকেরই পা ফাটার সমস্যা তীব্রভাবে দেখা দেয়। কারও কারও পায়ের ত্বক এত বেশি ফাটে যে রক্ত বের হয়, সংক্রমণ হয়ে যায়।
সাধারণত পায়ের গোড়ালির ত্বক শুষ্ক হয় বেশি। গোড়ালির ত্বক মোটা হয়ে যাওয়াকে বলে ক্যালোসেস। শীতে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায় বলে ক্যালোসেস আরও শুষ্ক হয়ে পড়ে। যাঁদের ডায়াবেটিস ও থাইরয়েডের সমস্যা আছে, তাঁদের ত্বক এমনিতেই শুষ্ক বেশি। এ ছাড়া যাঁরা খালি পায়ে হাঁটেন বা পেছনে উন্মুক্ত স্যান্ডেল পরেন, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকেন বা বাইরে কাটান, গোসল বা ওজু করার সময় খুব গরম পানি ব্যবহার করেন বা রুক্ষ সাবান ব্যবহার করেন, তাঁদের পা বেশি ফাটে।
ভিটামিনের অভাব, সোরিয়াসিস, অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস, ছত্রাক সংক্রমণ, গর্ভাবস্থা, স্থূলতা, পামোপ্লান্টার কেরাটোসিস ইত্যাদি থাকলে পায়ের ত্বক ফাটার সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। পায়ের গোড়ালিতে ফাটা ভাব, চুলকানি, চামড়া ওঠা, সাদা গুঁড়ো বের হওয়া, লালচে ভাব ধারণ করা, ব্যথা, রক্তপাত ইত্যাদি হতে পারে। কারও কারও সংক্রমণ হয়ে ঘা বা আলসার, সেলুলাইটিস হয়ে যেতে পারে। তাই পা ফাটা রোধে সচেতন হতে হবে।
কী করবেন
শীতল আবহাওয়ায় পেছনে খোলা স্যান্ডেল, খুব টাইট আর উঁচু জুতো এড়িয়ে চলুন। একই ভঙ্গিতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানো বা পা ক্রস করে বসা ভালো নয়। জুতার মধ্যে কুশন ইনসার্ট বা সিলিকন হিল কাপ ব্যবহার করা ভালো। শীতে আরামদায়ক মোজা পরা উচিত। প্রতিদিনি নিজের পা পরীক্ষা করে দেখুন। শুষ্কতা এড়াতে প্রচুর পানি পান করুন। পা পরিষ্কার করতে অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করবেন না, এতে ত্বক আরও শুষ্ক হয়, কুসুম গরম পানি ভালো।
গোসল বা রাতে শোওয়ার আগে পিউমিস স্টোন বা ফুট স্ক্রাবার দিয়ে পায়ের গোড়ালি ঘষে পরিষ্কার করে চাপ দিয়ে মুছে ভালো ময়েশ্চারাইজার বা ফুট ক্রিম বা পেট্রোলিয়াম জেলি পুরু করে লাগিয়ে নিন, দরকার হলে এরপর রাতে পাতলা মোজা পরে পা ঢেকে শুয়ে পরুন। নিজে নিজে আলগা চামড়া ওঠাতে যাবেন না, এতে ইনজুরি হতে পারে, যাতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে, দরকার হলে চিকিৎসকের সাহায্য নিন। যদি ফাটা জায়গা লাল হয়ে যায়, ব্যথা করে, ফুলে যায়, রক্তপাত হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের সাহায্য নেবেন।
অধ্যাপক মো. আসিফুজ্জামান,
বিভাগীয় প্রধান, চর্মরোগ বিভাগ,
গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা