careful-for-eye-problem-and-management

চোখের সমস্যা প্রতিরোধে যা খাবেন Leave a comment

লুটেইন হলো এক ধরনের এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ডোকোসাহেক্সায়োনিক এসিড, যা এক ধরনের ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। দুটিই চোখের জন্য উপকারী পরিবর্তন আনার মাধ্যমে বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন বা চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করতে পারে। লুটেইন ও ডিএইচএ উভয়েই ম্যাকুলার রঞ্জক এবং তা রেটিনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

গবেষণা:

এ নিয়ে পরিচালিত এক গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন ৬০ থেকে ৮০ বছর বয়সী ৪৯ নারী, যাদের প্রতিদিন ৮০০ মিলিগ্রাম ডিএইচএ  বা ১২ মিলিগ্রাম লুটেইন অথবা উভয়ই একসঙ্গে প্রয়োগ করা হয়। একটি গ্রুপকে দেয়া হয় সান্ত¡নামূলক চিকিৎসা। গবেষকদের প্রবীণ বয়সী নারীদের বেছে নেয়ার পেছনে কারণ হলো এ সময়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের ঝুঁকি বেশি থাকে। চার মাস এভাবে চলার পর তারা অংশগ্রহণকারীদের চোখের ম্যাকুলার রঞ্জকের মাত্রা পরিমাপ করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যাদের লুটেইন প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাদের ক্ষেত্রে ম্যাকুলার রঞ্জকের ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। লুটেইনের পাশাপাশি ডিএইচএ ও এই জাতীয় খাবার আরও সংযুক্ত করে এমনই ফল পাওয়া যায়।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডও একটি অপরিহার্য খাদ্য উপাদান। ফ্যাটি এসিড আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য। মস্তিষ্কের ৬০ শতাংশই ফ্যাটি এসিড। এ এসিড আমাদের শরীরের সেল মেমব্রেনে থাকে। কোষের ভেতর দিয়ে যেসব সাবস্টেন্স চলাচল করে, তা নিয়ন্ত্রণ করা এবং একটি সেল থেকে অন্য সেলের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে। ফ্যাটি এসিডগুলোর মধ্যে আমাদের শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড। যেসব সেলে বেশি ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে, সেসব সেলে ফ্লুইডের পরিমাণ বেশি থাকে এবং কার্যকরভাবে কাজ করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড হরমোন উৎপাদনও নিয়ন্ত্রণ করে।

আরকাইভস অব অফথেলমোলজিতে প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে জানা যায়, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বয়সের কারণে বা নির্দিষ্ট বয়সের আগেই চোখে ছানি পড়ার হার কমিয়ে দেয়। উল্লেখ্য, ৫০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের অন্ধত্বের প্রধান কারণ চোখে ছানি পড়া এবং বিশ্বের প্রায় ৩০ মিলিয়ন লোক এ সমস্যায় আক্রান্ত। আরকাইভসটি থেকে আরও জানা যায়, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খেলে বয়সজনিত ছানি পড়া ৭৫ শতাংশ কমে যায়।

লুটেইন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের প্রাকৃতিক উৎসগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজর, ব্রকলি, সবুজ শাকসবজি, পালংশাক, লেটুসপাতা, ভুট্টা, তিলের তেল, তিসির তেল, অলিভ অয়েল, সামুদ্রিক মাছের তেল অর্থাৎ ম্যাকারেল, টুনা, স্যামন, সারডিন ইত্যাদি মাছে পাওয়া যায় এবং এসব খাবার ড্রাই আই এবং ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোধ করতে সাহায্য করে। তাই আমরা নিয়মিত এসব খাবার গ্রহণ করে চোখের জ্যোতি বাড়াতে পারি।

প্রফেসর ডাঃ সৈয়দ একে আজাদ

(চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন)

সাবেক বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *