omicron-variant-ba2-spreading-quickly

অমিক্রনের আরেক সহোদর Leave a comment

অতি সম্প্রতি অমিক্রন কোভিড–১৯-এর এক সহোদরের আবির্ভাব ঘটেছে, এর নামকরণ করা হচ্ছে গুপ্ত উপধরন বা সাব–ভেরিয়েন্ট হিসেবে। কারণ চৌর্যবৃত্তিতে এটি পারদর্শী। আর তাই দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে দেহ কোষকে আক্রমণের ক্ষমতার জন্য এটি আপাত দুর্জয় মনে হচ্ছে।

নতুন এই সাব–ভেরিয়েন্টের নাম বিএ-২। এরই মধ্যে ইউরোপ আর এশিয়ার কিছু অংশে এর মূল সংস্করণ অমিক্রন বিএ-১-এর চেয়ে বেশি বিস্তৃত হতে চলেছে।

কী তাহলে বিএ-২

বিএ-২ প্রথম চিহ্নিত হয় ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায়। ২০২১ সাল শেষ থেকে এটি ছড়িয়ে পড়ল ডেনমার্কে। আর সংক্রমণের হার ২০ শতাংশ হতে শুরু করল। দুই সপ্তাহের মধ্যে ডেনমার্কে সব করোনা সংক্রমণের ৪৫ শতাংশ আর সম্প্রতি সংক্রমণের ৮৫ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন, অন্যান্য দেশেও বিএ-২ ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে এর অস্তিত্ব এখনো রয়েছে, আর একে এরই মধ্যে ‘ভেরিয়েন্ট অব ইনভেস্টিগেশন’ বলা হচ্ছে।

বিএ-২ কি দ্রুত ছড়ায়

আগের তথ্য-উপাত্ত দেখে বোঝা যায়, বিএ-২–এর সহোদর বিএ-১ থেকে বেশি সম্প্রচারক্ষম। ড্যানিশ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিএ-২ বিএ-১-এর চেয়ে দেড় গুণ দ্রুত ছড়াতে পারে। আর বিএ-২ বিএ-১-এর চেয়ে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। অবশ্য কৃষ্ণ মেঘের আড়ালে একটি রুপালি রেখা হলো বিএ-২ ছড়িয়ে পড়ার দিক থেকে বেশি প্রবল হলেও এটি থেকে গুরুতর অসুখ হওয়ার ঝুঁকি কম।

অমিক্রন সংক্রমণ হয়ে থাকলে বা টিকা নিলে বিএ-২ কী আবার হতে পারে

গবেষকেরা বলছেন, যাঁদের অমিক্রন সংক্রমণ হয়েছে, তাঁদের বিএ-২ সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা কম। বিএ-১-এর বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি বিএ-২-এর বিরুদ্ধে ভালোই কাজ করে। এসব কথা বলেছেন ফ্রেড হাচিন্সন ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার সিয়াটল ওয়াশিংটনের জেসসে ব্লুম।

টিকা আর বুস্টার নেওয়া মানুষদের মধ্যে এমন প্রমাণ নেই যে টিকা বিএ-২-এর বিরুদ্ধে কার্যকর নয়। অন্য মতও আছে, বিএ-২-এর ক্ষেত্রে স্পাইক প্রোটিনে হয় ২০টির বেশি মিউটেশন আর অন্য ভেরিয়েন্টের চেয়ে একে টিকা দিয়ে পর্যুদস্ত করা কঠিন।

উদ্বেগের কারণ হলো, যেহেতু এটি বিএ-১ থেকে বেশ ভিন্ন, তাই বর্তমান টিকা এদের কী পরিমাণ ঠেকাবে, তা বলা মুশকিল। এড়িয়ে যেতে পারে টিকা, এমনকি বিএ-১ নিউট্রালাইজিং অ্যানটিবডিস—বলেন যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের মেডিসিন বিভাগের ডা. বারটোন এফ হাইনেস।

আশা করি আমরা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে আরও স্পষ্ট, আরও আশাব্যঞ্জক উত্তর পাব। কথা হলো, করোনার সাব–ভেরিয়েন্টেরের উদ্ভব খুব সাম্প্রতিক, তাই বিজ্ঞান একে বুঝতে কিছু সময় নেবেই।

 

ডা. শুভাগত চৌধুরী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *